Ad 3

Thursday, October 25, 2018

ফেসবুক থেকেই আয়-রোজগার: পর্ব-৪ || Earn Money from Facebook- Bangla Tutorial Part-4

কীভাবে অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধি করবেন?


প্রতিদিন ফেসবুক পেজটিতে ৩টি করে পোস্ট দেবেন। কী পোস্ট করবেন, সেগুলো নিয়ে আগে কিছুটা ব্রেন স্ট্রোমিং করে নিন। ব্রেন স্ট্রোমিং করার ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিতে পারি।

ধরি, আপনার ব্যবসাটি হবে দেশীয় ভেজালমুক্ত খাবার, যেমন: ফরমালিনমুক্ত আম। তাহলে ফরমালিনের আপনার কন্টেন্টগুলো হবে, ফরমালিনের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়, আম নিয়ে বিভিন্ন টপিকসও এখানে যুক্ত হতে পারে।

এবার তাহলে এ সম্পর্কিত অনলাইনে কি কি পোস্ট আছে সেগুলো খুঁজে বের করে আগে সব লিস্ট করে রাখুন।

লিস্ট করে রাখা সব পোস্টগুলো থেকে এবার কন্টেন্ট তৈরি করুন। ফেসবুকের কন্টেন্ট সাইজ বেশি বড় না হওয়াটাই ভালো। ব্লগের কনটেন্ট হতে হয় বড়। অনলাইন থেকে খুঁজে বের করা আর্টিকেলগুলো থেকে নিজের মতো করে কন্টেন্ট তৈরি করুন।

কপি কন্টেন্ট না করে নিজের মতো করে কন্টেন্ট উপস্থাপন করুন। কপি কন্টেন্ট ব্যবহার করলে ব্রান্ডিংয়ে কম সফল হবেন। এমন কন্টেন্ট তৈরি করুন, যা মানুষের জন্য উপকারী হবে।

মানুষের উপকারী তথ্য দিয়ে কোনো পোস্ট করলেই, পেজের মেম্বাররা আপনাকে বন্ধু মনে করা শুরু করবে, আপনার ওপর আস্থা শুধুমাত্র তখনই তৈরি হবে।

শুরুতে কখনোই বিজ্ঞাপন টাইপ কোন পোস্ট করবেন না, তাতে বন্ধুত্ব তৈরি হবে না, দূরত্ব তৈরি হবে।

প্রতিদিনের ৩টি পোস্টের মধ্যে একটি পোস্ট কুইজ টাইপ হতে পারে। কুইজ টাইপ পোস্টে কমেন্ট এবং লাইক প্রচুর পাওয়া যায়।

সপ্তাহের একদিন ইনফোগ্রাফিকস ধরনের পোস্ট করতে পারেন। ছবি সম্পর্কিত পোস্টগুলো প্রচুর শেয়ার হয় এবং অ্যানগেজিংও প্রচুর বৃদ্ধি পায়।

আমি আমার একটি ফেসবুক পেজে (https://www.facebook.com/dr.foyzunnahar) এ কাজটি করেছিলাম। সেই রকম একটি ইমেজ এখানে শেয়ার করছি। ইমেজটি লক্ষ্য করলে দেখবেন, সেখানে মানুষের জন্য উপকারী তথ্য দেওয়া আছে এবং ছবিটি দেখতেও আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে অবশ্যই এটা শেয়ার হবে।

ছবিটির নিচের ফেসবুক পেজের নাম থাকার কারণে, যাদের ওয়্যালে শেয়ার হচ্ছে, তাদের কাছ থেকে তাদের বন্ধুরা পেজটি সম্পর্কে জানতে পারবে। আর বারবার এ পেজটির নাম জানলেই, সেটি ব্রান্ড হয়ে দাঁড়াবে। ব্যবসায়িক কারণে তৈরি কোনো ইমেজ কেউ সেটি শেয়ার করবে না।

কোনো একজন ডিজাইনারকে দিয়ে একটিমাত্র ছবি তৈরি করে নিন। পরে প্রতি সপ্তাহে শুধুমাত্র লেখা আর ছবি খুব সহজে নিজেই পরিবর্তন করে নিন। কাজটি তাহলে সহজ হয়ে যাবে।

শুরুর দিকে খুব সতর্কভাবে প্রতি ৩দিন পরপর কোনো একটি পোস্টে আপনার ব্যবসার কথা বলতে পারেন, তবে এত তাড়াতাড়ি সরাসরি প্রোডাক্ট বিক্রির কথা বললে, সেটি ব্রান্ডিংয়ের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সে রকম একটি পোস্টের উদাহরণ দিচ্ছি এখানে:

গত সপ্তাহে রাজশাহীতে আমার নিজের পরিচিত একটি বাগান থেকে ইকরাম ভাইয়ের কাছে এক মণ আম বিক্রি করেছিলাম। উনার পরিকল্পনা ছিল, আমগুলো এক মাস ধরে খাবে। কিন্তু ২ দিন পর দেখেছে, বেশির ভাগ আম পচে কাল হয়ে গেছে। হুমম, এটিই হচ্ছে, ফরমালিনমুক্ত আমের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

- মানুষের জন্য উপকারী এবং আপনার ব্যবসা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে মাঝে মাঝে চেষ্টা করুন, ব্লগে পোস্ট করেন। ব্লগপোস্টটির নিচে শুধু পেজে লাইক দেয়ার অনুরোধ করে পেজের লিংক দিয়ে এলেই হবে। ব্লগপোস্টে আর অন্য কোনো বিজ্ঞাপন চালানোর লোভ সংবরণ করুন। এ রকম ব্লগের জন্য পোস্ট মাসে ২টি হলেই চলবে। আরও বেশি করতে পারলে তো কথাই নেই। ভালোই হবে।

- কাছের মানুষদের কাছ থেকে পেজের রিভিউ অংশে ভালো রিভিউ লিখে নিন। অনুরোধের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে আদায় করে নিতে পারে শুরুর দিকে। যারা একটু অনলাইনে বেশি পরিচিত তাদের কাছ থেকে রিভিউ নিতে পারলে বেশি ভালো হবে। এ রিভিউ দেখে মানুষের মনে আপনার কাছ হতে প্রোডাক্ট কেনার ব্যাপারে আস্থা তৈরি হবে। কাছের মানুষের কাছে প্রোডাক্ট বিক্রি করেই রিভিউ নিন, মিথ্যা রিভিউ নেয়ার দরকার নেই।

- ১ মাস পর থেকে প্রতিদিনের ৩টি পোস্টের মধ্যে একটি পোস্ট অবশ্যই একটি বিজ্ঞাপনধর্মী পোস্ট হবে। দুটিও হতে পারে। চেষ্টা করুন, সেই ব্যবসা সম্পর্কিত নিজের যেকোনো কার্যক্রমগুলোই সেখানে পোস্ট করার জন্য্। তাহলে অ্যানগেজিংটা অনেক বাড়বে। তবে সব সময়ই বিজ্ঞাপনের বাইরেও সবার জন্য উপকারী কনটেন্ট অবশ্যই করার দিকে সচেতন থাকতে হবে।

- যেসব পোস্টগুলো সবার জন্য কাজে লাগবে, সেই পোস্টগুলো অন্যগ্রুপেও শেয়ার করুন। তাহলে এ ফেসবুক পেজটির লাইক বাড়তে থাকবে।

- ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন। ভিডিও শেয়ার হয় প্রচুর। সেখান থেকেও অনেক লাইক বৃদ্ধি পাবে। মাসে একটি ভিডিও আপলোড করার পরিকল্পনা রাখলেই ভালো হবে।

- মাসে একটি করে বিশেষ অফার দিতে পারেন। তবে সব সময় ব্যতিক্রম কিছু উদ্যোগ নিলে সেটি মানুষের নজরে খুব সহজে আসবে। এ রকম একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ফেসবুকে দেখলাম। সেটি শেয়ার করলাম।

Food Republic is calling all foodies for an Epic Challenge! Introducing The Abomination Challenge! Finish it all in 30 minutes and get all for free! Are you Ready?

Rules:
1. This challenge applies for one person

2. Time starts as soon as the timer starts

3. The challenger needs to clear all of the food and drink that is served

4. Food Republic reserves the right to change or omit any part of the challenge without prior announcement.

এ রকম ক্যাম্পেইন কমপক্ষে ৩ মাসে একবার হলেও অবশ্যই করতে হবে। এটি আপনার ব্রান্ডিং কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে।

- যদি লোকাল ব্যবসা হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে অফলাইন বিভিন্ন উদ্যোগও অবশ্যই নিতে হবে। নাহলে ব্রান্ডিং করা যাবে না। গরিব কিংবা এতিমদের বিনা মূল্যে ফ্রি ফল খাওয়ানোর উদ্যোগ, এ রকম কিছু অফলাইন ক্যাম্পেইন ব্রান্ডিংয়ের কাজকে অনেক সহজ করে দেবে। নিজের মাথা থেকে ব্যতিক্রম কিছু এ রকম উদ্যোগ নিতে পারেন।

অ্যানগেজমেন্ট এবং পেজের লাইক বৃদ্ধির আরও অনেক ধরনের উপায় বের করা যেতে পারে। এগুলো এখানে আর আলোচনা করলাম না।

সপ্তম ধাপ: প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য পেমেন্ট সিস্টেম): সব পেমেন্ট সিস্টেমের ব্যবস্থা করা না গেলেও চেষ্টা করতে পারেন জনপ্রিয় সব পেমেন্ট সিস্টেমগুলোতে ক্লায়েন্টের পেমেন্ট দেয়ার ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশের জন্য বিকাশ, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক এই জনপ্রিয় পেমেন্ট গেটওয়েগুলোর মাধ্যমে পেমেন্টের ব্যবস্থা অবশ্যই রাখতে হবে।

সব লেনদেন যতটুকু সম্ভব স্বচ্ছ রাখার চেষ্টা করবেন। তাহলেই সবার মধ্যে ব্যবসা সম্পর্কে আস্থা তৈরি হবে। এবং ব্যবসা অনেক বড় হবে, এবং সেই সঙ্গে টিকবেও অনেক দিন।

পেজের অ্যানগেজমেন্ট বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা আগে সাজিয়ে নিন। তাহলে কাজের সুবিধা হবে।

বাংলাদেশে সফল দুটি ই-কমার্স বিজনেস পেজের নাম এবং লিংক দিচ্ছি, তাদের পোস্টগুলোও অনুসরণ করেন। ওদের কনসালটেন্সি আমি করি। এবং তারা অনেক বেশি সফলও। তাদের পেজ দেখলেই পোস্টের ধরন সম্পর্কে আইডিয়া পাবেন।

১) জামদানি শাড়ি: https://web.facebook.com/JamdaniVille/

২) শুঁটকি: https://web.facebook.com/coxsbazarEshop/

ফেসবুক থেকেই আয়-রোজগার: পর্ব-৪ || Earn Money from Facebook- Bangla Tutorial Part-4


লেখক: মো. ইকরাম, পরিচালক, নেক্সাস আইটি।

0 comments:

Post a Comment

Thanks for comments

Blog Archive