Ad 3

Education makes a door to bright future

University admission and others information,International Scholarships, Postgraduate Scholarships, College Scholarship, Study Abroad Financial Aid, Scholarship Search Center and Exam resources for PEC, JSC, SSC, HSC, Degree and Masters Examinees in Bangladesh with take from update sports News, Live score, statistics, Government, Private, current Job Circular take from this site

Education is a way to success in life

University admission and others information,International Scholarships, Postgraduate Scholarships, College Scholarship, Study Abroad Financial Aid, Scholarship Search Center and Exam resources for PEC, JSC, SSC, HSC, Degree and Masters Examinees in Bangladesh with take from update sports News, Live score, statistics, Government, Private, current Job Circular take from this site

Education is a best friend goes lifelong

University admission and others information,International Scholarships, Postgraduate Scholarships, College Scholarship, Study Abroad Financial Aid, Scholarship Search Center and Exam resources for PEC, JSC, SSC, HSC, Degree and Masters Examinees in Bangladesh with take from update sports News, Live score, statistics, Government, Private, current Job Circular take from this site

Education makes a person a responsible citizen

University admission and others information,International Scholarships, Postgraduate Scholarships, College Scholarship, Study Abroad Financial Aid, Scholarship Search Center and Exam resources for PEC, JSC, SSC, HSC, Degree and Masters Examinees in Bangladesh with take from update sports News, Live score, statistics, Government, Private, current Job Circular take from this site

Education is a key to the door of all the dreams

University admission and others information,International Scholarships, Postgraduate Scholarships, College Scholarship, Study Abroad Financial Aid, Scholarship Search Center and Exam resources for PEC, JSC, SSC, HSC, Degree and Masters Examinees in Bangladesh with take from update sports News, Live score, statistics, Government, Private, current Job Circular take from this site

Thursday, April 19, 2018

How to calculation of Kilobyte, Megabyte, Gigabyte, Terabyte, Petabyte?



How to calculation of Kilobyte, Megabyte, Gigabyte, Terabyte, Petabyte?

কিভাবে হিসাব করা হয় কিলো, মেগা, গিগা, টেরা, পেটা?
Processor or Virtual Storage

· 1 Bit = Binary Digit
· 8 Bits = 1 Byte
· 1024 Bytes = 1 Kilobyte
· 1024 Kilobytes = 1 Megabyte
· 1024 Megabytes = 1 Gigabyte
· 1024 Gigabytes = 1 Terabyte
· 1024 Terabytes = 1 Petabyte
· 1024 Petabytes = 1 Exabyte
· 1024 Exabytes = 1 Zettabyte
· 1024 Zettabytes = 1 Yottabyte
· 1024 Yottabytes = 1 Brontobyte
· 1024 Brontobytes = 1 Geopbyte

Disk Storage

· 1 Bit = Binary Digit
· 8 Bits = 1 Byte
· 1000 Bytes = 1 Kilobyte
· 1000 Kilobytes = 1 Megabyte
· 1000 Megabytes = 1 Gigabyte
· 1000 Gigabytes = 1 Terabyte
· 1000 Terabytes = 1 Petabyte
· 1000 Petabytes = 1 Exabyte
· 1000 Exabytes = 1 Zettabyte
· 1000 Zettabytes = 1 Yottabyte
· 1000 Yottabytes = 1 Brontobyte
· 1000 Brontobytes = 1 Geopbyte

This is based on the IBM Dictionary of computing method to describe disk storage – the simplest.



How to calculation of Kilobyte, Megabyte, Gigabyte, Terabyte, Petabyte?


কিভাবে হিসাব করা হয় কিলো, মেগা, গিগা, টেরা, পেটা? এই নিয়ে আছে বেশ কয়েকটি প্রমিত মান। আই বি এম এর মতে এক কিলোবাইট হল ১০০০ বাইট, এক মেগাবাইট হল ১০০০ কিলোবাইট, এক গিগাবাইট  হল ১০০০ মেগাবাইট। কিন্তু আমরা বাস্তব হিসাব নিকাশ করতে গিয়ে দেখতে পাই ব্যপারটি অন্য রকম। আমরা একটি ২৫০ গিগা হার্ডড্রাইভ কিনে আনবার পরে সেটাকে উইনডোজ ফাইল সিস্টেম এ ফরম্যাট করলে দেখতে পাই, সেটার আকার দাড়ায় প্রায় ২৩২ গিগাবাইট এর মত। কেন এই পার্থক্য?

হার্ডডাইভ এর ম্যনুফ্যাকচারার রা হার্ডড্রাইভ স্পেস হিসাব করার জন্য ব্যবহার করেন ডেসিমাল পদ্ধতি। অর্থাৎ. ১০০০ কিলো সমান এক মেগা, ১০০০ মেগা এক গিগা ইত্যাদি। কিন্তু উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর ফাইল সিস্টেম স্পেস এর হিসাব করে বাইনারী পদ্ধতিতে। মানে হল, ১০২৪ কিলোবাইট সমান এক মেগা, ১০২৪ মেগা সমান এক গিগা ইত্যাদি। এর ফলে আপনি একটা ২৫০ গিগা হার্ডড্রাইভ কিনেও পাচ্ছেন ২৩২ গিগা। কম পাচ্ছেন কি? না, আপনি ঠিক পরিমান স্পেসই পাচ্ছেন, তবে হিসাবটা হচ্ছে একটু অন্যরকম ভাবে।

এত কথা থাক, এবারে আসি এই পরিমাপ পদ্ধতিগুলোর আকার সুচক এর দিকে। মেগা গিগা টেরা এমনকি পেটাবাইট পর্যন্ত শুনে থাকি আমরা, হিসাবটা অবশ্য এখানেই শেষ নয়, আরও আছে।

ঠিক কত বড় এই মেগা গিগা কিংবা টেরা? কতটুকু তথ্য রাখতে পারে তারা? আসুন, দেখা যাক।
কিলোবাইট: ১০০০ বাইট এর সমান হল এক কিলোবাইট। তবে আরেক হিসেবে এটা ১০২৪ বাইট এর সমান। এই যে প্যরাগ্রাফটি পড়ছেন আপনি, এর আকার প্রায় এক কিলোবাইট এর মত। পুরো লেখাটি হবে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ কিলোবাইট এর সমান।

মেগাবাইট: ১০০০ কিলোবাইট অথবা ১০২৪ কিলোবাইট এর সমান হল এক মেগাবাইট। কম্পিইটার যুগের প্রথম দিকে যে হার্ডড্রাইভগুলো ছিল, সেগুলোর আকার ছিল এক মেগা থেকে পাচ মেগা। অধুনা বিলুপ্ত ফ্লপিডিস্কে ধরত ১.৪৪ মেগাবাইট পরিমান তথ্য। ১০০ মেগাবাইট পরিমান জায়গায় প্রিন্টেড এনসাইক্লোপিডিয়া এর কয়েক ভলিউম ডিজিটাইজড টেক্সট এবং ইমেজ ধরে যাবে। ১০০০ পাতার বই এর সমপরিমান টেক্সট এক মেগার মধ্যে সহজেই রাখা যাবে। ৭০০ মেগা তে আবার একটি অপটিক্যাল ডিস্ক বা সিডির পরিমান জায়গা হয়।

গিগাবাইট: ১০০০ মেগা বা ১০২৪ মেগাবাইট পরিমান জায়গায় এক গিগা হয়। আজকাল ৫০০ গিগা হার্ডড্রাইভই কম্পিউটারের জন্য স্ট্যান্ডার্ড।  এক গিগা মানে প্রায় ১০০০ ফ্লপি ডিস্ক এর সমপরিমান তথ্য, এক গিগাতে একটি লাইব্রেরির দশটি শেলফের বই ধরে রাখা যাবে, ১০ গিগাতে একটি আস্ত স্ট্যান্ডার্ড লাইব্রেরির সকল বই এবং অনান্য রিডিং ম্যাটেরিয়াল রাখা যাবে।

টেরাবাইট: ১০০০ বা ১০২৪ গিগাবাইট এ হয় এক টেরাবাইট। আজকাল বাজারে এক টেরাবাইট কিংবা দুই টেরাবাইট এর হার্ডড্রাইভও পাওয়া যাচ্ছে। এক টেরাবাইট প্রায় এক ট্রিলিয়ন বাইট। এক টেরাবাইট এ ৩০০ কিলোবাইট আকারের ৩৬ লাখ ছবি সেভ করে রাথা যায়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ লাইব্রেরি অভ কংগ্রেস এর সকল টেক্সট কালেকশন ১০ টেরাবাইট এর মধ্যে রাখা সম্ভব।

পেটাবাইট: টেরার পরে ধাপ হল পেটা। ১০০০ অথবা ১০২৪ টেরাবাইট এর সমান হল এক পেটাবাইট। আবার বলা যায়, এক পেটাবাইট সমান ১০০ লক্ষ গিগাবাইট। ৫০ কোটি পেজ এর সমান বই এর ডিজিটাইজ টেক্সট রাখা যেতে পারে, ছয় ফুট উচু চার ড্রয়ার বিশিষ্ট দুই কোটি ফাইল কেবিনেট এর তথ্য রাখা যাবে এতে।

এক্সাবাইট: ১০০০ পেটাবাইট বা ১০২৫ পেটাবাইট সমান হল এক এক্সাবাইট। আরেক দিকে বলা যায়, ১০০ কোটি গিগাবাইট সমান হল এক এক্সাবাইট। মানবসভ্যতার শুরু থেকে যতজন মানুষ বেঁচেছে, তারা যত কথা বলেছে বর্তমান সময় পর্যন্ত তার লিখিত রুপ রাখা যাবে ৫ এক্সাবাইট এর মধ্যে।

জিটাবাইট: ১০০০ বা ১০২৪ এক্সাবাইট সমান এক জিটাবাইট। এটি কতবড়, সে সম্পর্কে ধারনা দিতে বলা যায়, ৩৫ জেটাবাইট তথ্য যদি ডিভিডি এর মধ্যে রাখা য়ায়, সেই ডিভিডিগুলো একটার উপরে আরেকটা রাখলে সেটার উচ্চতা হবে পৃথিবী থেকে চাদ পর্যন্ত।

ইয়োটাবাইট; ১০০০ বা ১০২৪ জিটাবাইট সমান এক ইয়োটাবাইট। এটা নিয়ে এক কথায় বলা যায়, বর্তমান সমযের সবথেকে গতিশীল ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করে এক ইয়োটাবাইট সমান ফাইল ডাউনোলড করতে সময লাগবে ১১ ট্রিলিয়ন বছরের কাছাকাছি।

ব্রন্টোবাইট: ১০০০ বা ১০২৪ ইয়োটাবাইট সমান এক ব্রন্টোবাইট। কেন যে এই মাপটা তৈরি করেছে সেটাই আশ্চর্য... অন্তত আগামী কযেক হাজার বছরে এই সাইজ দিযে কোনকিছু হিসাব করা যাবে না, কিংবা এক ব্রন্টোবাইট সমান হাড্রডাইভ বার হবে না। এক ব্রন্টোবাইট গনিতে লেখার জন্য ১ এর পরে ২৭ টা শুন্য বসাতে হবে। চিন্তা করুন এবার...

আমাদের ছেলেপুলেদের পরে এক হাজার প্রজন্ম জন্ম নেবার পরে এই মাপগুলো হয়ত তাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হযে যাবে, কে বলতে পারে, কি হবে তখনকার মুভি সাইজ কিংবা একটা গান এর সাইজ, কত হবে তখনকার ইন্টারনেট স্পীড। তবে এটুকু অনুমান করাই যায়, কয়েকশ বছর আগে অনেক মানুষ আমাদের বর্তমান অবস্থা কল্পনা করে বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন। সুতরাং  সেই একই কাজ আমাদের করার মানে হয় না, কারন যে সময়েই থাকুন না কেন আপনি, তার থেকেও উন্নততর সময়ের সম্ভাবনা থেকে যাবে সবসময়ই। তাই সন্তুষ্ট থাকুন বর্তমানেই। বর্তমানটাই বাস্তব, বাকিটুক এখনও ধোঁয়াশা...

Wednesday, April 18, 2018

ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের গত আঠারো আসরের ইতিহাস-FIFA World Cup History

ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের গত আঠারো আসরের ইতিহাস-FIFA World Cup History

আগের আঠারোটি  আসরে কি হয়েছিল, কিভাবে হয়েছিল, সেসব জানার আগ্রহ আছে অনেকেরই। তাদের জানার তৃষ্ণা মেটাতে এই আয়োজন।

প্রথম বিশ্বকাপের আসর ১৯৩০ সালে নয়, এটা হতে পারত ১৯০৬ সালেই! ১৯০৪ সালে ফিফা গঠিত হয়। সিদ্ধানত্ম নেয়া হয় দু'বছর পরই অনুষ্ঠিত হবে ফুটবলের এই সবচেয়ে বড় আসরটি। তবে অংশ নেয়া দেশগুলোর হাতে এত অল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় দল গঠন করা সম্ভব ছিল না। তাই ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ ১৯০৬ সালে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের গত আঠারো আসরের ইতিহাস-FIFA World Cup History
১৯৩০ ॥ ২৪ বছর দেরি করে আয়োজিত হলো প্রথম বিশ্বকাপের আসর। ফিফার প্রথম প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সের জুলে রিমের নামানুসারে বিশ্বকাপের নামকরণ করা হয় 'জুলেরিমে ট্রফি।' নিয়ম হয়, যে দেশ সবার আগে তিনবার এই কাপ জিতবে, তারা এটি চিরতরে নিজেদের কাছে রাখতে পারবে। প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজক উরম্নগুয়ে। ২৫-৫ ভোটে জিতে তারা বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পায়। প্রথম বিশ্বকাপ বলে এতে ছিল না কোন বাছাইপর্বের খেলা। অংশ নেয় মাত্র ১৩টি দেশ। আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে জাহাজ দিয়ে আসতে হবে বলে, ব্যয়বহুল ও দীর্ঘ দূরত্বের কারণে বেশির ভাগ ইউরোপীয় দেশ খেলতে অনীহা প্রকাশ করে। প্রথম বিশ্বকাপে ১৮ ম্যাচে গোল হয় ৭০টি। সবচেয়ে বেশি গোল করেন আর্জেন্টিনার গুইলার্মো স্টাবিল, ৮টি। প্রথম গোল করেন ফ্রান্সের লুসিয়েন লরেন্ট। ফাইনালে অংশ নেয় ১৯২৪ ও ১৯২৮ অলিম্পিকের ফুটবলে স্বর্ণজয়ী দল উরম্নগুয়ে। মন্টেভিডিওতে অনুষ্ঠিত ৩০ জুলাইয়ের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে দর্শকদের ঢল নেমেছিল। সংখ্যাটি ছিল ৯৩ হাজার। প্রতিবেশী দেশ আর্জেন্টিনার সঙ্গে উরম্নগুয়ে সঙ্গে সম্পর্কটা বরাবরই আদায়-কাঁচকলায়। ফাইনালেও তার যথার্থ প্রতিফলন দেখা গেল। দু'দলই অদ্ভুত বায়না ধরে বসল, তাদের নিজস্ব বল দিয়ে খেলতে হবে। বিপাকে পড়ে গেলেন রেফারি ল্যাইন্সমেন। প্রমাদ গুনলেন তিনি। কি করা যায়? মাথায় বুদ্ধি এল। ঠিক হলো, দু'দলের কথাই রাখা হবে। খেলার দুই অর্ধে দুই দলের দুই বল দিয়ে খেলা হবে। রাজি হয়ে উপায় ছিল না উরম্নগুয়ে-আর্জেন্টিনার। এবার ঝামেলা বাধলো, কার বল দিয়ে আগে খেলা হবে? সেটারও সমাধান হলো। টস করার মাধ্যমে। আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা নিজেদের করে নেয় স্বাগতিক উরম্নগুয়ে।


১৯৩৪ ॥ আমেরিকার গণ্ডি ছাড়িয়ে দ্বিতীয় আসর এবার বসে ইউরোপে। প্রথম আসরে ইউরোপের বেশির ভাগ দেশই উরম্নগুয়ে বিশ্বকাপে খেলতে যায়নি। ব্যাপারটা মাথায় ছিল তাদের। দ্বিতীয় আসরে সেটার বদলা তারা নিল ইউরোপে খেলতে না গিয়ে। ফিফার শত অনুরোধেও টলানো গেল না চ্যাম্পিয়ন উরম্নগুয়েকে। ফলে তাদের ছাড়াই দ্বিতীয় আসর। এবারই প্রথম ৩২ দেশ বাছাইপর্বে খেলে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা আদায় করে নিতে হয় ১৬টি দেশকে। মিসর প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে অংশ নেয়। ইতালিতে অনুষ্ঠিত এই আসরে ১৭ ম্যাচ ৭০ গোল হয়। সবেচয়ে বেশি ৪টি গোল করেন ইতালির সিহিয়াবিত্তি, পশ্চিম জার্মানির কোনেন ও চেকোসেস্নাভাকিয়ার নিজিডোলি। ১০ জুন রোমে অনুষ্ঠিত ফাইনালে চেকোসেস্নাভাকিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক ইতালি। ফাইনালে দর্শক হয়েছিল ৫৫ হাজার। এবারের আসরে রেফারিং ছিল খুবই বাজে।


১৯৩৮ ॥ তৃতীয় আসরটি বসে ইউরোপেই, ফ্রান্সে। ৩৬টি দেশ বাছাইপর্বে অংশ নেয়। মূলপর্বে খেলে ১৫ দেশ। মূলপর্বে ১৮ ম্যাচে গোল হয় ৮৪টি। ব্রাজিলের লিওনিডাস সবচেয়ে বেশি ৮ গোল করেন। গৃহযুদ্ধের কারণে এ আসরে অংশ নেয়নি স্পেন। অভিমান করে এবারও খেলতে আসেনি প্রথম আসরের শিরোপাধারী উরম্নগুয়ে। নিয়ম করা হয়, স্বাগতিক দেশ ও চ্যাম্পিয়ন দেশকে বাছাইপর্বে না খেলে সরাসরি মূলপর্বে খেলবে। ফলে কপাল খুলে যায় ফ্রান্স ও ইতালির। প্যারিসে অনুষ্ঠিত ১৯ জুনের ফাইনালে দর্শক এসেছিল ৬৫ হাজার। ৪-২ গোলে হাঙ্গেরিকে পরাজিত করে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতে ইতালি। ব্রাজিলের লিওনিডাসকে সেমিফাইনালে বিশ্রামে রাখায় ইতালির বিরম্নদ্ধে সে ম্যাচে ফেবারিট ব্রাজিল হেরে যায়। তারা শেষ পর্যনত্ম সুইডেনকে ৪-২ গোলে হারিয়ে তৃতীয় স্থানের অধিকারী হয়।

১৯৫০ ॥ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের করাল গ্রাসে পড়ে বিশ্বকাপের আসর। এ জন্য ১৯৪২ ও ১৯৪৬ সালের আসর দুটি অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৯৪২ সালে জার্মানির শাসক এডলফ হিটলার জুলে রিমে ট্রফি জোর করে ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। তার এই পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফিফা। ট্রফিটি তারা গোপনে পাঠিয়ে দেয় সুইস ব্যাংকে।
শেষ পর্যনত্ম ১২ বছর পর ১৯৫০ সালে আবারও আলোর মুখ দেখে বিশ্বকাপ। এবার আসর বসে লিওনিডাসের দেশ ব্রাজিলে। আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, তুরস্ক, সোভিয়েত ইউনিয়ন, হাঙ্গেরিসহ ১৮ দেশ সুযোগ পেয়েও অংশ নেয়নি। খেলোয়াড়দের খালি পায়ে খেলতে হবে বলে ভারতও ব্রাজিলে যায়নি। প্রথমবারের মতো অংশ নেয় ফুটবলের জনক ইংল্যান্ড। তাদের ১-০ গোলে হারিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপের আগে ১৯৪৯ সালের মে'তে এক মর্মানত্মিক বিমান দুর্ঘটনায় ইতালির বেশ ক'জন ফুটবলার নিহত হন। এদের মধ্যে জাতীয় দলের ছিলেন ৮ জন। ব্রাজিলের ৬ ভেনু্যতে ২২ ম্যাচে ৮৮ গোল করে অংশ নেয়া ১৩ দেশ। ৯ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন ব্রাজিলের এডেমির। এবার লীগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর প্রথম বিশ্বকাপের আসরটি। এই পদ্ধতি দারম্নণভাবে সমালোচিত হয়। রিও ডি জেনেরিওতে ১৬ জুলাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম মারকানায় ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৪ দর্শক টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচটি দেখতে উপস্থিত হয়। যা বিশ্বরেকর্ড। 'অঘোষিত ফাইনালে প্রথমে এক গোলে এগিয়ে গিয়েও ২-১ গোলে উরম্নগুয়ের কাছে পরাভূত হয়ে দেশের ফুটবলপ্রেমীদের শোক সাগরে ভাসায় স্বাগতিক ব্রাজিল।
আসরে ব্রাজিলই ছিল ফেবারিট। তাদের শিরোপা জয়ের ব্যাপারে সবাই এত আত্মবিশ্বাসী ছিল, আগেভাগেই দলের জন্য 'ভিক্টোরি সং' প্রস্তুত করে রাখা হয়। কিন্তু সব ওলট-পালট হয়ে যায় ব্রাজিলের হারে।


১৯৫৪ ॥ পঞ্চম আসর বসে প্রকৃতির লীলাভূমি সুইজারল্যান্ডে। তাদের সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও তারা তা ভুল প্রমাণ করে। বাছাই পর্বে ৩৮ দেশ থেকে মূল পর্বে অংশ নেয় ১৬ দেশ। এশিয়া থেকে প্রথম দল হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। গতবারের মতো এবারও অভিমান করে না আর্জেন্টিনা আসায় দর্শকরা আলফ্রেড ডি স্টেফানোর মতো কালজয়ী ফুটবলারের খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত হয়। এই বিশ্বকাপের ফরম্যাট ছিল খুবই ত্রম্নটিপূর্ণ। অনেকের কাছেই হাস্যকর। এর পুরোপুরি ফায়দা লোটে পশ্চিম জার্মানি। তাছাড়া স্বাগতিকদের ওপর তাদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তারা চ্যাম্পিয়ন হয় বলেই মনে করেন ফুটবলবোদ্ধারা। রেফারির পক্ষপাতমূলক আচরণে অনেক ফেবারিট দলই কাঙ্ৰিত সাফল্য পায়নি। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল-হাঙ্গেরি ম্যাচটিকে বিশ্বকাপের ইতিহাসের সবচেয়ে 'বর্বর ম্যাচ' বলা হয়। এ খেলায় মাঠে ও মাঠের বাইরে দু'দলের খেলোয়াড়রা মারামারিতে জড়িয়ে পড়নে। ম্যাচটিতে রেফারিকে ৪২টি ফ্রি-কিক, ২টি পেনাল্টি, ৪ জনকে হলুদ ও ৩ জনকে লাল কার্ড দেখাতে হয়। বার্নে ৪ জুলাই অনুষ্ঠিত ফাইনালে তখনকার তুখোড় ও দুর্ধষ দল হাঙ্গেরিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে চমক দেখানোর পাশাপাশি প্রথমবারের মতো শিরোপা লাভ করে জার্মানি। আসরে ২৬ ম্যাচে গোল হয় ১৪০টি। সবচেয়ে বেশি ১১টি গোল করেন হাঙ্গেরির স্যান্ডোর কক্সিস। এবারই প্রথম বিশ্বকাপের খেলা টিভিতে সমপ্রচারিত হয়। ফাইনালে দর্শক হয়েছিল ৬০ হাজার। গ্রম্নপ পর্বে যে হাঙ্গেরি জার্মানিকে গুনে গুনে ৮ গোল দিয়েছিল (৮-৩), তারাই ফাইনালে একই প্রতিপক্ষের বিরম্নদ্ধে ৩-২ গোলে হেরে যায় অবিশ্বাস্যভাবে। দলের সবচেয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ সদস্য ফেরেঙ্ক পুসকাস আহত থাকায় ফাইনালে স্বাভাবিক নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি। তারপরও তিনি দলের হয়ে এক গোল করেন। কিন্তু শেষ হাসি হাসে জার্মানিই।

১৯৫৮ ॥ নিয়মানুযায়ী ষষ্ঠ বিশ্বকাপের আসর বসার কথা ছিল লাতিন আমেরিকায়। কিন্তু শৈত্যবহুল স্ক্যানডেনেভিয়ান দেশ সুইডেনেই বসে তা। বাছাই পর্বে ৫৩ দেশ থেকে মূলপর্বে কোয়ালিফাই করে ১৬ দেশ। ৩৫ ম্যাচে গোল হয় ১২৬টি। ১৩ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন ফ্রান্সের জাস্ট ফন্টেইন। কোন বিশ্বকাপের আসরে এত বেশি গোলের রেকর্ড পরবর্তীতে আর কেউই ভাঙ্গতে পারেননি। দাপটের সঙ্গে খেলে ব্রাজিল ও সবাইকে অবাক করে দিয়ে স্বাগতিক সুইডেন উঠে আসে ফাইনালে। স্টকহোমে অনুষ্ঠিত ২৯ জুনের ফাইনালে ব্রাজিল ৫-২ গোলে সুইডেনকে হারিয়ে আট বছর আগের দুঃখের অবসান ঘটায়। ফাইনালে দর্শক সমাগম হয়েছিল ৪৯ হাজার ৭৩৭ জন। প্রথমবারের মতো শিরোপা লাভের সঙ্গে লাভ করে মাত্র ১৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড পেলেকে, যিনি ফাইনালে ২ ও সেমিফাইনালে ৩ গোল করে ফুটবল বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলেন। পরে তিনিই হয়ে ওঠেন বিশ্বের সেরা ফুটবলার। এক মহাদেশের হয়ে অন্য মহাদেশে গিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের নজির গড়ে ব্রাজিল।


১৯৬২ ॥ এমনিতেই মধ্যবিত্ত দেশ হিসেবে পরিচিত লাতিন আমেরিকার দেশ চিলি। তারা কিভাবে ব্যয়বহুল ফুটবল টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করবে, সেটা নিয়ে সংশয় ছিল অনেকেরই। সেটা আরও বহুগুণে বাড়ল, যখন বিশ্বকাপ শুরম্নর মাস কয়েক আগে দেশটিতে এক প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। তবে সব আশঙ্কাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে চিলি খুব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবেই আয়োজন করে আসরটি। ব্রাজিল এবারও ফেবারিট ছিল। তবে পেলে কঠিন ইনজুরিতে পড়লে ব্রাজিলিয়ানরা ধরেই নেন, কাপ জিততে পারবেন ব্রাজিল। কিন্তু গ্যারিঞ্চা নামের এক অসাধারণ ফুটবলারের কাঁধে ভর করে চেকোসেস্নাভাকিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ব্রাজিল দেখিয়ে দেয় পেলে ছাড়াও বিশ্বকাপ জিততে সৰম ব্রাজিল। গ্যারিঞ্চার (তার নামের অর্থ 'ছোট পাখি') শারীরিক বৈশিষ্ট্য ছিল, তার বাঁ পা ছিল ডান পায়ের চেয়ে ছোট। এ সমস্যা নিয়েই তিনি নয়নাভিরাম খেলে দর্শক তথা বিশ্ববাসীর মন কেড়ে নেন। ব্রাজিলের গ্যারিঞ্চা, ভাভা, হাঙ্গেরির ফ্লোরিয়ান আলবার্ট, চিলির লিওনেল সানচেজ, যুগোসস্নাভিয়ার ড্রাগন জারকোভিচ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ভ্যালেন্টিন ইভানভ ৪ গোল সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। ৩২ ম্যাচে গোল হয় ৮৯টি। ৫৬ দেশ বাছাই পর্বে খেলে। মূলপর্বে খেলে ১৬টি দেশ। সানত্মিয়াগোতে ১৭ জুনের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে ভিড় করেছিলেন ৬৯ হাজার দর্শক।


১৯৬৬ ॥ অষ্টম বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় 'ফুটবলের জনক'খ্যাত ইংল্যান্ডে। আসর শুরম্নর চার মাস আগে দেশটির ওয়েস্ট মিনিস্টারের ডাকটিকেট প্রদশর্নী থেকে চুরি হয়ে যায় জুলে রিমে ট্রফিটি। বিখ্যাত স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড ব্যর্থ হলেও পোষা কুকুর 'পিকলস' ঠিকই খুঁজে পায় বিশ্বকাপটি। এবারও অংশ নেয় ১৬ দেশ। বাছাই পর্বে খেলে ৭১ দেশ। এশিয়া থেকে প্রথমবারের মতো খেলতে এসেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করে উত্তর কোরিয়া। তারা শক্তিশালী ইতালিকে হারিয়ে শোরগোল ফেলে দেয় ফুটবল বিশ্বে। তাদের বিজয় যাত্রা থামিয়ে দেন পতর্ুগালের অতিমানব ইউসেবিও। কোয়ার্টারে ৩ গোলে পিছিয়ে থেকেও ৫-৩ গোলে জয়ী হয় পতর্ুগাল। একাই চার গোল করেন 'কালো চিতা'র খেতাব পাওয়া ইউসেবিও। টুর্নামেন্টে ৯ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার সম্মান লাভ করেন তিনি। আর আসরে ৩২ ম্যাচে গোল হয় ৮৯টি। তবে পতর্ুগাল নয় (তারা লাভ করে তিন নম্বর স্থানটি), চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৩০ জুলাই ৯৬ হাজার ৯৯৪ দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে উলস্নাসে ফেটে পড়েন ববি মুর, ববি চার্লটন, গর্ডন ব্যাংকসরা। ইংল্যান্ডের স্ট্রাইকার জিওফ হার্স্ট হ্যাটট্রিক করেন (এটা ফাইনালে কোন খেলোয়াড়ের এখন পর্যনত্ম প্রথম ও একমাত্র নজির)। খেলা যখন ২-২ গোলে ড্র, তখন হার্স্ট আরেকটি গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। কিন্তু জার্মানরা দাবি করে, হার্স্টের করা শটটি গোল লাইন অতিক্রম করেনি। কিন্তু রেফারি লাইন্সম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে জার্মানদের এ দাবি নাকচ করে দেন। পরে টিভি রিপেস্নতে দেখেও ব্যাপারটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ আসরে ব্রাজিলের পেলে পতর্ুগালের বিরম্নদ্ধে খেলতে গিয়ে মারাত্মক আহত হন। অভিমানে তিনি ঘোষণা করেন, 'আর বিশ্বকাপ খেলব না।' বিশ্বকাপ জেতায় ইংল্যান্ডের ম্যানেজার আলফে রামসেকে 'স্যার' উপাধি দেয়া হয়।
১৯৭০ ॥ মধ্য আমেরিকার দেশ মেঙ্েিকাতে অনুষ্ঠিত হয় ইতিহাসের নবম বিশ্বকাপ। এবারও বাছাইপর্বে খেলে ৭১ দেশ। মূলপর্বে খেলে যথারীতি ১৬টি দেশ। এশিয়া থেকে প্রথমবারের মতো খেলতে আসে মধ্যপ্রাচের দেশ ইসরাইল। ৩২ ম্যাচে গোল হয় ৯৫টি। পশ্চিম জার্মানির গার্ড মুলার ১০ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। মেঙ্েিকা সিটিতে ২১ জুন অনুষ্ঠিত ফাইনালে দর্শক এসেছিল ১ লাখ ১০ হাজার। ফাইনালে অনুপম ফুটবলশৈলী উপহার দিয়ে ৪-১ গোলে ইতালিকে হারিয়ে চিরতরে জুলে রিমে ট্রফি নিজেদের করে নেয় পেলের দল ব্রাজিল। একই সুযোগ ছিল ইতালিরও। ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড জোয়ারজিনহো প্রতি ম্যাচে (৭ ম্যাচে ৭ গোল) করে প্রত্যেক রাউন্ডে গোল করে এক বিরল কীর্তি স্থাপন করেন। এই রেকর্ড এখনও অটুট। চার বছর আগে অভিমান করলেও দেশের স্বার্থে শেষ পর্যনত্ম বিশ্বকাপে খেলতে রাজি হন কালো মানিক পেলে এবং তার খেলোয়াড়ি জীবনের সেরা খেলাটাই খেলেন এই আসরে। ব্রাজিল-ইংল্যান্ড কোয়ার্টার ফাইনালে পেলের করা এক চমৎকার হেড নিশ্চিত গোল হওয়া থেকে অবিশ্বাস্য ৰিপ্রতায় রৰা করেন ইংরেজ গোলরৰক ব্যাংকস। তার এই প্রচেষ্টাকে অভিহিত করা হয় 'সর্বকালের সেরা গোল রৰা' হিসেবে।


১৯৭৪ ॥ দশম বিশ্বকাপের ট্রফির নাম পাল্টে যায়। নতুন নাম হয় 'ফিফা বিশ্বকাপ।' কেননা নিয়ম অনুযায়ী জুলে রিমে ট্রফিটি তিনবার জেতায় তা ব্রাজিলের চিরস্থায়ী সম্পত্তি হয়ে যায়। আসরের ফরম্যাটও বদলে যায়। দ্বিতীয় পর্বে নক আউট সিস্টেমের বদলে লীগ পদ্ধতি চালু হয়। বাছাইপর্বে খেলে ৯৯ দেশ। মূলপর্বে খেলে ১৬ দেশ। ম্যাচ সংখ্যা বেড়ে যায়। ৩৮ ম্যাচে গোল হয় ৯৭টি। পোল্যান্ডের গ্রেগ লাটো ৭ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। পশ্চিম জার্মানির গার্ড মুলার ৪ গোল করেন। এর ফলে তিনি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল করার (১৪টি) অধিকারী হন। মিউনিখে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ৭ জুলাই ৭৭ হাজার ৮৩৩ দর্শকের সামনে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক পশ্চিম জার্মানি ও 'টোটাল ফুটবলের' স্রষ্টা হল্যান্ড। জোহান ক্রুয়েফের ফেবারটি হল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে পাক্কা ২০ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের দেশ জার্মানি।


১৯৭৮ ॥ একাদশ বিশ্বকাপের আসর বসে প্রথম বিশ্বকাপের রার্নাসআপ আর্জেন্টিনায়। ১৯৩০ সালের ফাইনালের ব্যর্থতা তারা এবার ভুলে যায় শিরোপা জিতে। আসর শুরম্নর আগে দেশটিতে সামরিক শাসনের সূত্রপাত হয়। তাছাড়া আবির্ভাব ঘটে 'মনত্মেনেরস' নামের এক সন্ত্রাসী গ্রম্নপের। ফলে আসর আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা যায়। সন্ত্রাসী গ্রম্নপটি আসর চলাকালে কোন অঘটন না ঘটানোর অঙ্গীকার করলে শেষ পর্যনত্ম নির্বিঘ্নেই অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ। তবে সামরিক শাসনের প্রতিবাদে খেলতে আসেননি হল্যান্ডের ক্রুয়েফ, জার্মানির বেকেনবাওয়ার, পল ব্রেইটনারসহ অনেকে। বাছাইপর্বে খেলে ১০৬ দেশ। মূলপর্বে খেলে ১৬ দেশ। এশিয়া থেকে প্রথমবারের মতো খেলতে আসে ইরান। টুর্নামেন্টে ৩৮ ম্যাচে গোল হয় ১০২টি। সবচেয়ে বেশি গোল করেন স্বাগতিক দলের মারিও কেম্পেস, ৬টি। টুর্নামেন্টে অন্যতম শিরোপাপ্রত্যাশী ব্রাজিল গোল গড়ে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়। অথচ তারা আসরের অপরাজিত দল! ব্রাজিল অভিযোগ করে তাদের ফাইনালে যাওয়া আটকাতে আর্জেন্টিনা-পেরম্নর সঙ্গে পাতানো ম্যাচ খেলে বেশি গোল (আর্জেন্টিনার দরকার ছিল ৪-০ গোলে জয়, তারা জেতে ৬-০ গোলে) করে ফাইনালে চলে যায়। আরও অভিযোগ ওঠে, পেরম্নর গোলরৰক ছিলেন আর্জেন্টাইন বংশোদ্ভূত। তাই তিনি জন্মভূমিকে ফাইনালে ওঠাতে ইচ্ছে করে গোল হজম করেন। ২৫ জুন ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় বুয়েন্স আয়ার্সে। দর্শক ছিল ৭৭ হাজার ২৬০। ফাইনালে প্রতিপৰ গতবারের রানার্সআপ হল্যান্ড। ৩-১ গোলে ডাচবাহিনীকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কাপ জয় করে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে আর্জেন্টাইনরা। আর বিশ্বকাপ হল্যান্ডের কাছে এক বুকভাঙ্গা দীর্ঘশ্বাস হয়েই রইল। অসম্ভব প্রতিভাবান ১৭ বছর বয়সী দিয়াগো ম্যারাডোনাকে নেয়ার জন্য চাপ থাকলেও শেষ পর্যনত্ম বয়স কমের অজুহাতে তাকে দলে নেননি আর্জেন্টাইন কোচ সেজার মেনত্তি।

১৯৮২ ॥ বিশ্বকাপ ফুটবলের ১২তম আসর বসে স্পেনে। সেবার মূলপর্বে দল বেড়ে দাঁড়ায় ২৪টিতে। বাছাইপর্বে অংশ নেয় ১০৯ দেশ। এশিয়া থেকে খেলতে আসে কুয়েত ও দৰিণ কোরিয়া। ৫২ ম্যাচে গোল হয় ১৪৬টি। ৬ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন ইতালির পাওলো রসি। মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত ১১ জুলাইয়ের ফাইনাল ম্যাচে দর্শক সমাগম হয়েছিল ৯০ হাজার। মুখোমুখি হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুই মিত্রদেশ ইতালি ও পশ্চিম জার্মানি। ৩-১ গোলে জার্মানদের হারিয়ে ৫৬ বছর পর ব্রাজিলের মতো সর্বোচ্চ তিনবার কাপ জিতে নেয় ইতালি। বাজে রেফারিং, পাতানো ম্যাচ ইত্যাদির কারণে আসরের মর্যাদা ৰুণ্ন হয়।


১৯৮৬ ॥ বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরটিতে প্রচুর তারকা ফুটবলার ছিলেন। ব্রাজিলের জিকো, সক্রেটিস, ফ্রান্সের পস্নাতিনি, জার্মানির রম্নমেনিগে, ইতালির রসি, বেলজিয়ামের শিফো, ইংল্যান্ডের লিনেকার। কিন্তু এরা কেউ নন, মঞ্চ কাঁপিয়ে দিলেন দিয়াগো ম্যারাডোনা। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে যিনি অল্প বয়সের অজুহাতে বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি। ১৯৮৬-তে ২৫ বছর বয়সে তিনিই হয়ে গেলেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। ৫টি গোল করেলেন। এর একটিকে 'সর্বকালের সেরা গোল' হিসেবে ফিফা ঘোষণা দেয়। কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি ইংল্যান্ডের বিরম্নদ্ধে ম্যাচে তাদের ৬ জন পেস্নয়ারকে অবিশ্বাস্য দৰতায় কাটিয়ে সম্পূর্ণ একক প্রচেষ্টায় গোল করেন। ওই ম্যাচেই তিনি চাতুর্যের সঙ্গে হাত দিয়ে আরেকটি গোল করেন। যাকে তিনি পরে বলেছিলেন, 'এটা ছিল ঈশ্বরের হাত।' ওয়ানম্যান শো বলতে যা বোঝায়, ম্যারাডোনা ছিলেন তা-ই। দলকে ফাইনালে তুলে আনেন একক চেষ্টায়। দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। ফাইনালে ৩-২ গোলে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে ৮ বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। গতবারের মতো এবারও রানার্সআপ হয়ে হতাশার অনলে পুড়ে জার্মানরা। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ম্যারাডোনা-ম্যানিয়া। সর্বকালের সেরা ফুটবলার পেলে না ম্যারাডোনা_এ বিতর্কের শুরম্ন তখন থেকেই, যা আজও চলছে।
এই আসরে বাছাইপর্বে খেলে ১১২ দেশ। মূলপর্বে খেলে ২৪ দেশ। ৫২ ম্যাচে গোল হয় ১১৫টি। ইংল্যান্ডের গ্যারি লিনেকার ৬ গোল করে জিতে নেন প্রথম প্রবর্তিত 'গোল্ডেন বুটে'র পুরস্কার। মেঙ্েিকা সিটির অ্যাজটেক স্টেডিয়ামে ২৯ জুনের ফাইনালে ম্যাচে দর্শক হয় অবিশ্বাস্য_১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৭০। অথচ ১৯৭৪ সালেই ঠিক হয়েছিল, ১৯৮৬-এর আসর বসবে কলম্বিয়ায়। কিন্তু অর্থনৈতিক সমস্যা ও অবকাঠামো প্রস্তুতির অভাবে ১৯৮২ সালে তারা আসর আয়োজনে অপরাগতা প্রকাশ করে। তখন আগ্রহ দেখায় মেঙ্েিকা।

১৯৯০ ॥ ৫৬ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পায় ইতালি। এবার অবশ্য আগেরবারের মতো চ্যাম্পিয়ন নয়, সন্তুষ্ট থাকতে হয় তৃতীয় স্থান নিয়েই। সেমিফাইনালে তাদের জয়যাত্রা থামিয়ে ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা। পুরো টুর্নামেন্টে এক ভাঙ্গাচোরা দল নিয়ে নেগেটিভ ফুটবল খেলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ঠিকই দলকে ফাইনালে নিয়ে যান দলনায়ক ম্যারাডোনা। তবে এবার এবার দলকে কাপ জেতাতে পারলেন না। ১-০ গোলে হেরে যান পশ্চিম জার্মানির কাছে। টানা তিনবার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার রেকর্ড গড়া জার্মানি গতবারের হারের বদলা নেয় আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে। তবে খেলার অনত্মিম সময়ে তারা পেনাল্টি থেকে যে গোলটি করে, তা যথাযথ ছিল না। মেঙ্কিান রেফারি এডগার্ডো কোডেসাল পেনাল্টির নির্দেশ দিয়ে সর্বনাশ ডেকে আনেন আর্জেন্টিনার। ফাইনালে হেরে ম্যারাডোনার করম্নণ কান্নার দৃশ্য আজও অনত্মরে গেঁথে আছে ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে। সেবার ফাইনালে দর্শক হয়েছিল ৭৩ হাজার ৬০৩। খেলা হয়েছিল রোমে, ৮ জুলাই। টুর্নামেন্টের ৫২ ম্যাচে গোল হয় ১১৫টি। সর্বোচ্চ ৬টি গোল করে 'গোল্ডেন বুট' জিতে নেন ইতালির সালভাতোর শিলাচি। উলেস্নখ্য, তিনি প্রতিটি গোল করেন বদলি পেস্নয়ার হিসেবে। আফ্রিকার দেশ ক্যামেরম্নন আসরে উদ্বোধনী ম্যাচে ১-০ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চমকে দেয়। তারা এ চমক অব্যাহত রাখে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যনত্ম। তাদের ৩৮ বছর বয়সী স্ট্রাইকার রজার মিলা মোট ৪ গোল করেন। গোল করার পর ফ্ল্যাগ কর্নারে গিয়ে তার কোমর দোলানো অদ্ভুত নাচ দারম্নণ আলোচিত হয়। মূলপর্বে অংশ নেয় ২৪ দেশ। বাছাইপর্বে খেলেছিল ১১২ দেশ। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ফাউল করা হয় ম্যারাডোনাকে, ৪৭ বার!

১৯৯৪ ॥ মার্কিন মুলস্নুকে বিশ্বকাপ হয় ১৯৯৪ সালে। ১৩৩ দেশের মধ্যে মূলপর্বে খেলে ২৪টি দলই। ৫২ ম্যাচে হয় ১৪১ গোল। ৬টি কেরে গোল করেন বুলগেরিয়ার রিস্টো স্টইচকভ ও রাশিয়ার ওলেগ সালেঙ্কো। দু'জনেই যৌথভাবে গোল্ডেন বুট পান। সালেঙ্কো ক্যামেরম্ননের বিরম্নদ্ধে হ্যাটট্রিকসহ একাই করেন ৫ গোল, যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে রেকর্ড। লস এ্যাঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত ফাইনালে উঠে ব্রাজিল-ইতালি। দর্শক ছিল ৯০ হাজার। ২৪ বছর পর ফাইনালে ওঠে ব্রাজিল এবং শিরোপা জিতে নেয় টাইব্রেকারে জিতে (৩-২), যা বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথম টাইব্রেকার। রবার্টো ব্যাজিও পেনাল্টি মিস করে হন ইতালির ট্র্যাজেডির নায়ক। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিরম্নদ্ধে হেরে যাওয়া ম্যাচে কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার আন্দ্রেস এস্কোবার আত্মঘাতী গোল করলে দেশে ফিরলে জুয়াড়িদের গুলিতে প্রাণ হারান, দিয়াগো ম্যারাডোনা ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ ঘোষিত হন, ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড রোমারিওর অনন্য ফুটবলশৈলী প্রদর্শন করেন_সব মিলিয়ে '৯৪-এর বিশ্বকাপ ছিল দারম্নণ আলোচিত।

১৯৯৮ ॥ ষোড়শ বিশ্বকাপের আসর বসে ফ্রান্সে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আসরটি আয়োজন করে তারা। বাছাইপর্বে খেলে ১৭০ দেশ। তবে মূলপর্বে দল বেড়ে দাঁড়ায় ৩২-এ। এশিয়া থেকেও ২টি দল বেড়ে যায়_অংশ নেয় দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, জাপান ও ইরান। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নেয় ক্রোয়েশিয়া, জ্যামাইকা, জাপান ও দ. আফ্রিকা। ৬৪ ম্যাচে গোল হয় ১৭১টি। ক্রোয়েশিয়ার ডেভর সুকর সর্বোচ্চ ৬টি গোল করে গোল্ডেন বুট পুরস্কার লাভ করেন। সেন্ট ডেনিসে ১৪ জুলাই ৭৫ হাজার দর্শকের সামনে ফাইনালে মুখোমুখি হয় গতবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ও স্বাগতিক ফ্রান্স। ফেবারিট ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে ফ্রান্স। দুটি গোলই করেন কুশলী মিডফিল্ডার জিনেদিন জিদান। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ফরাসীরা। ব্রাজিলের স্ট্রাইকার রোনাল্ডো ফাইনালের কিছুক্ষণ আগে রহস্যজনকভাবে 'মূর্ছা' যান। কোচ মারিও জাগালো প্রথমে তাকে খেলাতে না চাইলেও পরে স্পন্সর ও দর্শকদের চাপে খেলাতে বাধ্য হন। খেলায় পুরো নিষ্প্রভ ছিলেন ফাইনালের আগ পর্যনত্ম দুর্দানত্ম খেলা রোনাল্ডো। কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের লরেন্ট ব্রাংকো প্যারাগুয়ের বিরম্নদ্ধে গোল করেন, তার এ গোলটি বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম 'গোল্ডেন গোল' হিসেবে ঠাঁই পায়।

২০০২ ॥ প্রথমবারের মতো এশিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর, তাও একসঙ্গে দুই দেশে। আয়োজক জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া। সপ্তদশ বিশ্বকাপ। শতাব্দীর প্রথম। সহস্রাব্দেরও প্রথম। আয়োজনটাও ছিল খুবই আকষর্ণীয়। বাছাইপর্বে অংশ নেয় ১৯৯ দেশ। মূলপর্বে খেলে ৩২ দেশ। প্রথমবারের মতো অংশ নেয় সেনেগাল, সেস্নাভেনিয়া, চীন ও ইকুয়েডর। ৬৪ ম্যাচে ১৬১ গোল হয়। ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গোল্ডেন বুট পান ব্রাজিলের রোনাল্ডো। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র গোলরক্ষক হিসেবে 'লেভ ইয়াসিন গোল্ডেন বল' পুরস্কার পেয়ে অনন্য কীর্তি গড়েন জার্মানির অলিভার কান। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের রোনাল্ডিনহো ইংল্যান্ডের বিরম্নদ্ধে ৩৫ গজ দূর থেকে ফ্রি-কিক থেকে এক বিস্ময়কর গোল করে পরাসত্ম করেন গোলরক্ষক ডেভিড সিম্যানকে। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে উদ্বোধনী খেলায় ১-০ হারিয়ে চমক সৃষ্টি করে এককালে তাদেরই উপনিবেশ দেশ সেনেগাল। সেনেগাল কোয়ার্টার পর্যনত্ম গিয়ে আরও চমক দেখায়। ফ্রান্সও চমক দেখায় প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়ে। স্বাগতিক দ. কোরিয়া সেমিতে উঠে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। তুরস্ক তৃতীয় হয়ে সবার নজর কাড়ে। পরিচ্ছন্ন খেলার জন্য ৫০ হাজার ডলার পুরস্কার পায় বেলজিয়াম। টানা তিনটি ফাইনাল খেলার রেকর্ড গড়েন ব্রাজিলের কাফু। বিশ্বব্যাপী টিভি প্রসারতার কারণে এবার চার শ' কোটিরও বেশি দর্শক বিশ্বকাপ উপভোগ করেন। ফাইনালে দর্শক হাজির ছিলেন ৬২ হাজার ৫৬১। জাপানের ইয়োকোহামায় ৩০ জুনের ফাইনালে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। ১৯৫৮ সালের পর আবারও ভিন্ন মহাদেশে কাপ জয় করার অনন্য কীর্তি গড়ে সাম্বা নাচের দেশ ব্রাজিল।

২০০৬ ॥ সর্বশেষ অষ্টাদশ বিশ্বকাপ অনুুষ্ঠিত হয় জার্মানিতে। মূলপর্বে যথারীতি ৩২ দেশ। নিয়ম করা হয়, চ্যাম্পিয়ন দলকেও বাছাইপর্বে খেলতে হবে। ফলে ব্রাজিলকে বাছাইপর্বে খেলে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিতে হয়। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ অভিষেক হয় এঙ্গোলা, আইভরিকোস্ট, কোস্টারিকা, চেক প্রজাতন্ত্র, ঘানা, টোগো, ইউক্রেন ও সার্বিয়া-মন্টেনেগ্রো। ৬৪ ম্যাচে ১৪৭ গোল হয়। ৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গোল্ডেন বুটের অধিকারী হন .... ব্রাজিলের রোনাল্ডো। ৩ গোল করলে বিশ্বকাপে তার মোট গোল দাঁড়ায় ১৫টি। ফলে তিনি টপকে যান জার্মানির গার্ড মুলারের ১৪ গোলের রেকর্ডকে। বার্লিনে ৯ জুলাই ফাইনাল খেলে ইতালি ও ফ্রান্স। খেলা ১-১ গোলে ড্র হলে ১৯৯৪ সালের পর আবারও আশ্রয় নিতে হয় টাইব্রেকারের। এতে ফ্রান্সকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে ২৪ বছর পর চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে উলস্নাসে ফেটে পড়েন বুফন, ডেল পিয়েরো, মালদিনি, নেসত্মা, ক্যানাভারো, টট্টিরা। ম্যাচ টাইব্রেকার গড়ানোর আগে ইতালির ডিফেন্ডার মার্কো মাতারাজ্জি জিদানকে আপত্তিকর মনত্মব্য করলে জিদান মেজাজ হারিয়ে মাতারাজ্জিকে মাথা দিয়ে গুঁতো মারলে রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখান। অনেকেই মনে করেন, এ ঘটনা মনোবল ভেঙ্গে দেয় ফরাসিদের, তাই তারা হেরে যায়।

Blog Archive